এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: প্লাস্টিক দূষণ কমাতে এ বারের নির্বাচনে দেওয়াল লেখা এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমেই প্রচার বাড়াতে চাইছে রাজনৈতিক দলগুলি। সঙ্গে ছোট ছোট মিটিং-মিছিলের সংখ্যা বাড়িয়েই নিবিড় প্রচার সারতে চাইছে দলগুলি। এবারের নির্বাচনে প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার কমিয়ে অন্যান্য পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর ব্যবহার বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই এই প্রচার কৌশল গ্রহণ করতে চাইছে দলগুলি।আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার যেমন বলছেন, 'মিটিং, মিছিল কিংবা দেওয়াল লেখায় তো প্লাস্টিকের ব্যবহার হয় না। তাই এই ধরনের মাধ্যমগুলির মাধ্যমে প্রচার বাড়ানোর ওপরই জোর দেওয়া উচিত। আমরাও সেই চেষ্টা করব।' আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষও বলেন, 'নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী হিসেবে আমাদের দলের রাজ্য দপ্তর থেকে কী কিট আসে, সেটা আগে দেখি। তবে স্থানীয় স্তরে আমরা প্লাস্টিক সামগ্রী যথাসম্ভব এড়িয়েই প্রচার করব। সে কারণেই জোর দেব মিটিং-মিছিল, দেওয়াল লেখার ওপর। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে আমাদের দেওয়াল লেখা।'একই আশ্বাস মিলেছে সিপিএমের তরফেও। সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া কমিটির সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'প্লাস্টিক পুরোপুরি বর্জন করে প্রচার করাটা অসুবিধা হবে। তবে যতটা সম্ভব তা বর্জন করারই চেষ্টা করব। আর বিকল্প বলতে মিছিল, মিটিং, দেওয়াল লিখন করেই প্রচার সারতে হবে।'উলুবেড়িয়া লোকসভা লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গে এবার উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভার উপনির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলার সভাপতি অনুপম মল্লিক জানান, প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে দেওয়াল লেখার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ওপর জোর দিতে চাইছে দল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং (পূর্ব)-র বিধায়ক শওকত মোল্লাও জানান, প্লাস্টিকের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এ বার ডিজিটাল মিডিয়া, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে প্রচারে জোর দেব আমরা।এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়নি বামেদের। কিন্তু তার আগেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কং সাইটে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন,'বিজেপির ৫ বছরের ব্যর্থতা আর রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম অত্যাচারের তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে সেই প্রচার পৌঁছে দেওয়া হবে। এই প্রচার চালানোর জন্যে প্রতিটি বুথে দু'জনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ওরাই এলাকাতে প্রচার চালাবে। বড় সভা প্রচারের শেষের দিকে হলেও বাড়ি বাড়ি প্রচার ও বুথ মিটিংএর ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেব আমরা।'এই জেলায় একই প্রচার কৌশল গ্রহণ করেছে গেরুয়া শিবিরও। জেলার বিজেপির মিডিয়া সেল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান ও সাফল্য তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার চালাবে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন মাইতি বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও আমরা বুথ স্তরের প্রচারের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি।'হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরূপ রায় অবশ্য মনে করেন, শুধু ভোটের সময় কেন, সারা বছরই প্লাস্টিক ব্যান করা উচিত। যদিও এবারের নির্বাচনে প্লাস্টিকের ফ্লেক্স, ফেস্টুন তারাও পুরোপুরি বর্জন করতে পারবেন, এমন কথা দিতে পারছেন না তিনি। তাঁর কথায়, 'শুধু দেওয়াল লিখে তো আর ভোট হয় না। তবে এটুকু বলতে পারি, ভোট মেটার পর যাতে দ্রুত প্লাস্টিকের ফ্লেক্স, ফেস্টুন, হোর্ডিং খুলে ফেলা হয়, সেই উদ্যোগ অবশ্যই নেওয়া হবে দলের তরফে। সেক্ষত্রে বর্ষার সময়ে প্লাস্টিকের কারণে ভোগান্তি এড়ানো যাবে।'নির্বাচন কমিশন অবশ্য শুধুমাত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর কথা বলেছে তাই নয়, ভোটের মরসুমে শব্দদূষণ ঠেকাতেও আবেদন জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে দলের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন অরূপ রায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনেই মাইক ব্যবহার করা হবে। আর আওয়াজ যেন ৬৫ ডেসিবেলের নীচেই থাকে, সেটা অবশ্যই আমরা লক্ষ্য রাখব।' সোনারপুর (উত্তর)-এর বিধায়ক ফিরদৌসি বেগমও বলেন, 'মাইক, সাউন্ড বক্স সবই ব্যবহার করতে হবে ভোটের প্রচারে। কিন্তু তা যাতে শব্দ বিধি মেনেই হয়, সেটা আমরা দেখব।' নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকও মনে করেন, বেশি সংখ্যায় দেওয়াল লেখা হলে, প্লাস্টিকের ব্যবহার অন্তত ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, 'সঙ্গে শব্দবিধি মেনে মাইকিংয়ের ওপর জোর দেব আমরা।'
from Eisamay https://ift.tt/2HAn9Xg
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Author Details
I am an Executive Engineer at University of Barishal. I am also a professional web developer and Technical Support Engineer.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন