এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১৭ বছরে আয় দাঁড়িয়েছে সবথেকে তলানিতে। অন্য দিকে, আরব সাগরের উল্টো দিকে প্রতিযোগী হিসাবে ক্রমশ উঠে আসছে ইন্ডিগো। গত অর্থ বছরটা ভারতের অসামরিক বিমান ক্ষেত্রের কাছে সবথেকে আতঙ্কের ছিল। বিমান জ্বালানির চড়া দাম বৃদ্ধিতেও কোনও সংস্থাই ভাড়া বাড়াতে পারেনি, পাছে যাত্রী সংখ্যা কমে যায় এই আশঙ্কায়। ফলস্বরূপ, অর্থাভাবে সমস্ত পরিষেবা গত ১৭ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। তবে তার অন্তত ছয় মাস আগে থেকেই জেট বিভিন্ন রুটে উড়ান কমাতে শুরু করে। এরই পুরো লাভ তুলেছে ইন্ডিগো ও স্পাইসজেট। গত অর্থ বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ইন্ডিগো-র নিট মুনাফা চার গুণ বেড়েছে। স্পাইসজেট-কে ১৩টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বসিয়ে দিতে হলেও টিকিটের দাম বাড়ায় তাদেরও নিট মুনাফা ২২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। জেট-জট না কাটলে ইন্ডিগো সহ বাকি ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলির ব্যবসা যে বহুলাংশে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের অভ্যন্তরীণ উড়ান বাজারের প্রায় ৫০ শতাংশ ইন্ডিগো-র দখলে। কিন্তু, তারা আন্তর্জাতিক রুটগুলিতে যাত্রীবহন ক্ষমতা বাড়িয়েছে ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক নানা গন্তব্যে ইন্ডিগো-র উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব দখল করার দীর্ঘ দিনের বাসনা পূরণ এখন তাদের নাগালের মধ্যে। আর এটাই এমিরটেস-এর মতো মধ্য প্রাচ্যের উড়ান সংস্থাগুলির কাছে অশনি সঙ্কেত। ভারত থেকে বিবিধ আন্তর্জাতিক গন্তব্যের যাত্রীদের ২৫ শতাংশ মধ্য প্রাচ্যের উড়ান সংস্থাগুলি বহন করে। জেট যতদিন পরিষেবা দিয়েছে, এই সংখ্যাটি ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। কারণ, জেটের সহযোগী এতিহাদ ভারত থেকে একটা বড় সংখ্যক আন্তর্জাতিক যাত্রী পেত। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দুই হাব বিমানবন্দর, দুবাই ও আবু ধাবির মাধ্যমে ভারতের আন্তর্জাতিক উড়ান যাত্রীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি যাতায়াত করে থাকেন। ভারতের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে এমিরেটস তাদের মোট যাত্রী সংখ্যার ৯.৪ শতাংশ পায়। গত বছরের শেষে ইন্ডিগো বরাত দেওয়া ১৫০টি এ৩২১ নিও বিমানগুলির মধ্যে প্রথমটি হাতে পায়। এই দূরপাল্লার বিমানগুলির মাধ্যমে ভারতের যে কোনও গন্তব্য থেকে মধ্য প্রাচ্য ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি এবং পূর্ব ইউরোপের একটা অংশ হাতের নাগালের মধ্যে চলে আসবে ইন্ডিগো-র। পাশাপাশি, ভারত থেকে লন্ডনের মধ্যে সস্তার উড়ানও তারা চালু করতে পারে। আন্তর্জাতিক উপস্থিতি বাড়াতে অধিকাংশ উড়ান সংস্থা সতর্কতা অবলম্বন করে। কারণ, অভ্যন্তরীণ বাজারের থেকে আন্তর্জাতিক রুট অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। তবে ভারতের অভ্যন্তরে বিমান জ্বালানির উপর করের হার চড়া হওয়ায় বেশি দামের টিকিটের আন্তর্জাতিক রুট ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলির কাছে তুলনায় আকর্ষণীয়। ইন্ডিগো-র প্রতি আসন কিলোমিটারে খরচ ৫.১৭ সেন্ট, তুলনায় এমিরটেস-এর খরচ ৬.৮ সেন্ট। অন্য দিকে, গত এক বছরে আন্তর্জাতিক রুটে ইন্ডিগো-র আয় বেড়েছে ১৩.৬ শতাংশ, যা অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধির দ্বিগুণেরও বেশি। তবে কোন পথে ইন্ডিগো-র সম্প্রসারণ তা নিয়ে ভিন্ন মেরুতে উড়ান সংস্থাটির দুই প্রোমোটার, রাহুল ভাটিয়া এবং রাকেশ গাঙ্গওয়াল। ভাটিয়া বড় বিমান চালিয়ে দূর-পাল্লার আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ান চালানোর পক্ষে, যেখানে গাঙ্গওয়াল চান দূর-পাল্লার আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ইন্ডিগো-র উড়ান না চালিয়ে অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে কোড-শেয়ারিং করতে। ভাটিয়ার পরিকল্পনায় গাঙ্গওয়াল শেষ পর্যন্ত যদি সায় দেন, সে ক্ষেত্রে এমিরেটস, এতিহাদ এয়ারওয়েজের মতো মধ্য প্রাচ্যের উড়ান সংস্থাগুলির কপাল পোড়ার সমূহ সম্ভাবনা।
from Eisamay http://bit.ly/2HJRfHG
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Author Details
I am an Executive Engineer at University of Barishal. I am also a professional web developer and Technical Support Engineer.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন