এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চাকরি পাকা। শুধু রেজিস্ট্রেশনের জন্য নাকি দিতে হবে ১০টা টাকা। সেই টাকা মেটাতে গিয়েই প্রায় দু'লক্ষ টাকা খোয়ালেন এক তরুণী। সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা, তিনি যখন অনলাইনে নেটব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে ১০ টাকা পেমেন্ট করছেন, তখন ফোন লাইনেই ছিল প্রতারক। কী ভাবে চাকরির জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে, প্রতারক তার ফিরিস্তি দিচ্ছিল তরুণীকে। একেবারে পেশাদার কোনও সংস্থার একজিকিউটিভের মতোই তার কথা শুনে অবিশ্বাসের কারণ দেখেননি তরুণী। কিন্তু ১০ টাকা মেটাতে গিয়ে যে সর্বস্ব হারাতে হবে, ভাবতেই পারেননি।সন্তোষপুরের বাসিন্দা শ্রেয়া দাস একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। তিনি নতুন চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। সে জন্য একটি নামী অনলাইন জব সাইটে নিজের নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন শ্রেয়া। দিন দু'য়েক আগে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। জব সাইটে যে বায়োডেটা জমা দিয়েছিলেন শ্রেয়া, ফোনের উল্টো দিকের ব্যক্তিটি তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বলে দেওয়ায় শ্রেয়ার বিশ্বাস দৃঢ় হয়। এর পর প্রতারক জানায়, শ্রেয়ার নাম একটি সংস্থার জন্য বিবেচিত হয়েছে। তার জন্য তাঁর নাম রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাবদ মাত্র ১০ টাকা জমা দিতে হবে। কী ভাবে সেটা দিতে হবে, ফোনেই তার ধারাবিবরণী দিতে থাকে প্রতারক। তাকে ফোনে ধরে তার কথামতোই অনলাইন সাইটে ঢোকেন শ্রেয়া।তিনি জানান, অনলাইন ওয়ালেট মারফত টাকা মেটাবেন। শ্রেয়া বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমাকে ওই ব্যক্তি জানায়, টাকা দিতে হবে ক্রেডিট কার্ড বা নেটব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে। টাকার অঙ্কটা কম বলে আমি রাজি হয়ে যাই। যে সাইটের মাধ্যমে আমাকে টাকা দিতে বলা হয়, খালি চোখে দেখে বোঝার উপায়ই নেই, সেটি আসল নাকি জাল।' তাঁর অভিযোগ, ১০ টাকা জমা দেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইলে কোনও ওটিপি আসেনি। উল্টে কয়েক মিনিটের মধ্যে ১ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় অ্যাকাউন্ট থেকে। তখনও ফোনের ও-পারে রয়েছে অপরিচিত ব্যক্তিটি। শ্রেয়া উত্তেজিত হয়ে তাকে গোটা বিষয়টি জানাতেই সে তাঁকে একটু ধাতস্থ হতে বলে। তার দু'মিনিটের মধ্যে অ্যাকাউন্টের বাকি ৪৫ হাজার টাকাও ফাঁকা হয়ে যায়।যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শ্রেয়া। তাঁর অভিযোগ, 'ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে আমি জানাই, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে কেউ বা কারা জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়েছে। তখন ব্যাঙ্কের উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে পেমেন্ট আটকে দেওয়ার। তারা তা করেনি। আমি সার্ভে পার্ক থানার পাশাপাশি লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখাতেও অভিযোগ দায়ের করেছি।'সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায়চৌধুরী মনে করেন, 'যে সাইটে ঢুকে পেমেন্ট করেছিলেন শ্রেয়া, সেই সাইটটিতে নেটব্যাঙ্কিংয়ের আইডি-পাসওয়ার্ড দেওয়ামাত্র তা সম্ভবত কপি করে নিয়েছে প্রতারকরা। সেটি আসলে একটি ফিশিং সাইট। তার পর সেই আইডি-পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই সব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।' তাঁর যুক্তি, এ দেশের কোথাও নেটব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা মেটানো হলে ওটিপি আসার কথা। সম্ভবত এই টাকা গিয়েছে বিদেশের কোনও অ্যাকাউন্ট বা ওয়ালেটে।
from Eisamay https://ift.tt/2HvRq9I
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Author Details
I am an Executive Engineer at University of Barishal. I am also a professional web developer and Technical Support Engineer.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন