বরিশালের টাইমস, জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারা বাংলা, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, চাকরি, বিনোদন, সাতসতেরো, ক্যাম্পাস, অন্যান্য

Breaking

শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

বিহারে ৬৫-র বৃদ্ধা ১৩ মাসে আট সন্তানের 'জন্ম' দিয়েছেন, বলছে সরকারি নথি!

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: নাহ, এটার ছাপার ভুল নয়। রাজ্যের নাম বিহার। যেখানে এমন 'অঘটন' আজও ঘটে। লালু প্রসাদের জমানায় ঘটেছে। নীতীশ কুমারের জমানাতেও ঘটে। বিহারের সরকারি এক রেকর্ডই জানাচ্ছে, ১৩ মাসের মধ্যে আট সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মহিলা। মনুষ্য গর্ভে আট সন্তানের জন্ম শুনলে, বিস্মিত হতে হয় বইকি। কিন্তু, এটা ঘটনা দিন কয়েক আগেই বাংলাদেশের কুমিল্লার এক গৃহবধূ শারমিন আক্তার একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন। সংবাদ সংস্থার খবর জানাচ্ছে, সেখানকার লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। যদিও, পাঁচ নবজাতকের মধ্যে তিন জনকে বাঁচানো যায়নি। ওজন কম হওয়ায় এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিন নবজাতক মারা যায়। বিহারের যে আধিকারিক ওই রেকর্ড নথিভুক্ত করেছেন, তিনি হয়তো বাংলাদেশি বধূর উল্লেখ করে পালটা প্রশ্ন করতেই পারেন, কুমিল্লা শারমিন আক্তারের গর্ভে যদি পাঁচ সন্তান আসতে পারে, তা হলে বিহারের শান্তি দেবীর গর্ভে আট সন্তানে সমস্যা কোথায়? সমস্যা কিছু নেই। এ দুনিয়ায় সবই সম্ভব। শারমিন আক্তার শুধু নন। অতীতে এমন ঘটনা আরও ঘটেছে। আকছার না-হলেও কালেভদ্রে দেশ-বিদেশে এমন খবর শোনা গিয়েছে। কিন্তু, খটকা যেখানে, প্রসূতির বয়স বর্তমানে ৬৫। এবং তিনি একসঙ্গে ওই আট শিশুর জন্ম দেননি। ১৩ মাসের মধ্যে কিছুদিনের ব্যবধানে একে একে আট সন্তান প্রসব করেছেন। আরও পড়ুন: সরকারি রেকর্ড যা-ই বলুক, এটা যে বাস্তবিক সম্ভব নয়, তা আর বলার অপেক্ষাও রাখে না। আদতে তা ঘটেওনি। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোনোর মতো বিহারে আরও এক কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে। কেলেঙ্কারির নাম NRHM। আরও ভেঙে বললে, ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন বা রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনা। এই NRHM-এর আওতায় বরাদ্দ টাকা তুলতে বিহারের সরকারি রেকর্ড ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে ১৩ মাসের মধ্যে আট বার গর্ভবতী দেখানো হয়েছে। প্রতিটি ডেলিভারির পর সরকারি বরাদ্দ ১,৪০০ টাকা করে তোলা হয়েছে। আরও পড়ুন: ঘটনা হল, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে বিহারের মুজফ্‌ফরপুরের শান্তি দেবী আট সন্তান দূরে থাক, একটি সন্তানেরও জন্ম দেননি। অথচ, ১,৪০০ টাকা করে আট বার সেই টাকা রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনা থেকে বরাদ্দ হয়েছে। ফলে, NRHM তহবিলের টাকা যে আত্মসাত্‍‌ করা হয়েছে, তা সামনে চলে আসে। কিন্তু, শান্তি দেবী নিজে সেই টাকার এক আনাও পাননি। তিনি আট সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে উল্লেখ করে কেউ বা কারা টাকা তুলেছেন, এর বিন্দুবিসর্গ তিনি অনেক দিন পর্যন্ত জানতে পারেননি। তদন্তে জানা যায়, বিগত ২০ বছরের মধ্যে মুজফ্‌ফরপুরের ওই বৃদ্ধা কোনও সন্তানের জন্ম দেননি। শান্তি দেবীর ছোট ছেলের বয়স এখন ২০। মুজফ্‌ফরপুরের মুশারি ব্লকের ওই বৃদ্ধা জানেনও না ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের অগস্টের মধ্যে তাঁকে ১,৪০০ টাকা করে আট বার দেওয়া হয়েছে। প্রতিবার তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ার পরদিনই কেউ একজন সেই টাকা তুলে নিয়েছেন। বিষয়টি নজরে আসার পরেই শান্তি দেবীর পরিবার তা ব্যাংকে জানায়। কিন্তু, শান্তি দেবীতেই শেষ নয়। বিহারে আরও অনেক জনের সঙ্গেই একই ঘটনা ঘটেছে। তেমনই আর একজন লীলা দেবী। বাড়ি ওই একই ব্লকের ছোটি কোঠিয়া গ্রামে। লীলা দেবীকেও দেখানো হয়, ১৩ মাসে তিনিও আট সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তার মধ্যে সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, একদিনে দু'বার সন্তান প্রসবও তিনি করেছেন। হকিকত হল, বিগত একদশকের মধ্যে তাঁর কোনও সন্তান হয়নি। অনেক আগেই তিনি পরিবার পরিকল্পনায় অস্ত্রোপচার করিয়ে নিয়েছেন। লীলা দেবীর ক্ষেত্রেও টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার পরদিনই গায়েব হয়ে গিয়েছে। পাবলিক হেলথ সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার উপেন্দ্র চৌধুরিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত করণিক ছুটিতে আছেন। তাই তাঁর পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে, সিভিস সার্জন ডাক্তার এসপি সিং প্রতিশ্রুতি দেন, প্রকল্পের টাকা যাঁরা আত্মসাত্‍‌ করেছেন, সেই কালপ্রিটদের খুঁজে বের করে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এ জন্য তাঁরা তদন্ত করবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন। বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে বৃহস্পতিবার জানান, NRHM কেলেঙ্কারিতে চার সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিটি তদন্ত করবে। দোষীদের রেয়াত করা হবে না। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। ।


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/2Yjc7gL

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Pages