এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: সরাসরি যদিও একটি বারের জন্যও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নাম তিনি মুখে আনেননি। কিন্তু, অনেক দিন পর ফের শুভেন্দু অধিকারীর মুখে শোনা গেল 'দলনেত্রী', 'আমাদের দল'-এর মতো শব্দবন্ধগুলি। বৃহস্পতিবার ঘাটালে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে কয়েক মুহূর্তের জন্য অতীতে ফিরলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা, নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। মমতার উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললেন, 'দলনেত্রীই একসময় আমাকে সাংগঠনিক দায়িত্ব, ভোটের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।' ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠে ওই অনুষ্ঠানে শুভেন্দু মিনিট পনেরো ছিলেন। জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তপন দত্ত, কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি, খড়ারের উপ-পুরপ্রধান অরূপ রায়, গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহের মতো তৃণমূলের কয়েক জন নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে একটি কালীপুজোরও উদ্বোধন করেন শুভেন্দু। সেই অর্থে গুরুত্বপূর্ণ বা বিতর্কিত কোনও মন্তব্য করেননি রাজ্যের এই মন্ত্রী। কিন্তু, ও তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতের আবহে তাঁর মুখে 'দলনেত্রী', 'আমাদের দল'-এর মতো শব্দবন্ধগুলি যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। সম্প্রতি একাধিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দলনেত্রী ও তৃণমূলের দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অরাজনৈতিক মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও দলীয় সভা-কর্মসূচি এড়িয়ে চলছিলেন তৃণমূলের এই দাপুটে মন্ত্রী। কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তিনি মুখে আনেননি। দু'দিন আগে নন্দীগ্রাম থেকে সুর চড়িয়ে 'রাজনৈতিক মঞ্চে লড়াই'য়ের বার্তাও দেন শুভেন্দু। ফলে, তাঁর বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়ে যায়। অনেককেই বলতে শোনা যায়, শুভেন্দুর বিজেপিতে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। নন্দীগ্রামের সভায় তৃণমূলের এই মন্ত্রীর গলায় 'ভারতমাতা জিন্দাবাদ' তাঁর গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার জল্পনাকে আরও উস্কে দেয়। দলের সঙ্গে এই সংঘাতের আবহেই বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর হঠাত্ করেই শুভেন্দুর কাঁথির বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। শুভেন্দু সেসময় বাড়িতে না থাকলেও তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয় পিকের। শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে রাত ১০টা পর্যন্ত ছিলেন প্রশান্ত। শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বলে তিনি ফিরে আসেন। দু-ঘণ্টা ধরে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে পিকে বা অধিকারী পরিবারের কেউ মুখ না খুললেও সূত্রের খবর, শুভেন্দুই ছিলেন আলোচনায়। শুভেন্দুর অভিমান ভাঙাতে সমঝোতার বার্তা নিয়ে কাঁথিতে ছুটে যান প্রশান্ত কিশোর। ঘটনাচক্রে বুধবারই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতত্ব। বৃহস্পতিবার অবস্থান বদলে আরও একবার তাঁর দিকে সমঝোতার হাত বাড়িয়ে দেয় দল। এদিন আবার বিভিন্ন সমাজমাধ্যমেও শুভেন্দুকে ফের সক্রিয় ভাবে দলের মূলস্রোতে ফেরানোর দাবি ওঠে। অন্তর্কলহ মিটিয়ে 'দ্রুত সংসার জোড়া দেওয়া'র কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজে কর্মী-সমর্থকেরা আর্জি পেশ করেন। শুভেন্দুর সঙ্গে যুক্ত সমাজমাধ্যমেও একই আর্জি জানানো হয়। আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার ঘাটালের সভায় শুভেন্দুর স্বীকারোক্তি, '২০১১ সালে দলনেত্রীর নেতৃত্বে গোটা লড়াইটা হয়েছিল। ঘাটালে তখন দলনেত্রী আমায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ঘাটালে আমাদের দলের প্রার্থী মার খেয়েছিলেন। আমি একা ছুটে এসেছি। চিকিত্সার ব্যবস্থা করেছিলাম।' তৃণমূলের এই দাপুটে বলেন, '২০১০ সালে দল আমাকে ঘাটালের পাঁচটি পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তখন আমাদের প্রার্থী দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। হুডখোলা গাড়ি, এত বৈভব ছিল না। শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম। এক-এক করে পুরসভা হাতে এসেছিল।' আরও পড়ুন: শুভেন্দুর মুখে 'দল', 'দলনেত্রী'র কথা ফিরে আসায় নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, 'যাঁরা সত্যিকারের তৃণমূলের সৈনিক, তৃণমূলকে ভালোবাসেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানকে অস্বীকার করতে পারবেন না।' এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। ।
from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/35rP07w
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন