এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধনী বিল পাশ হয়ে গেলেও কবে থেকে এবং কী ভাবে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে--তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। কিন্তু দলের অন্দরে বিজেপি নেতারা প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, খুব দ্রুতই লাগু হতে চলেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। বিরোধীরা হাজার আপত্তি তুললেও আপস করা হবে না। বঙ্গ-বিজেপি সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ শুক্রবার জাতীয় গ্রন্থাগারে দলের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি থেকেই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। বৈঠকে হাজির কলকাতার বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘হাতে খুব বেশি সময় নেই। ফেব্রুয়ারিতে নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ শুরুর আগেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএ বোঝানোর কাজ শেষ করতেই হবে।’ শিবপ্রকাশের এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে কয়েক জন বিজেপি নেতা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে সিএএ কার্যকরী করার ক্ষেত্রে কি সমস্যা হবে না? সূত্রের খবর, জবাবে শিবপ্রকাশ তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘এমন ভাবেই সব কিছু করা হবে যাতে রাজ্য চাইলেও কিছু করতে পারবে না।’ কী সেই ব্যবস্থা, তা খোলসা করেননি শিবপ্রকাশ। তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘অনলাইনে নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ চলবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সেটা করতে হবে। এ বার সুযোগ ফস্কে গেলে আবার পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণ মানুষের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সেটাই আমাদের বোঝাতে হবে।’ আরও পড়ুন: দেশজুড়ে সিএএ নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ চললেও বিজেপি প্রমাণে মরিয়া যে, মানুষ এই আইনের পক্ষেই। তাই নির্দিষ্ট একটি টোল ফ্রি নম্বরে মিসড্ কল দিয়ে সিএএ সমর্থনের আহ্বানও জানাতে চলেছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘আমরা লিফলেট হাতে সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএ বোঝাব। সাবাইকে বলব, যদি এই আইনকে সমর্থন করেন তবে নির্দিষ্ট নম্বরে মিস্ড কল দিন।’ সূত্রের খবর, প্রতি সপ্তাহে দেশের কত মানুষ মিস্ড কল দিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন করেছেন--ঘটা করে তা দিল্লি থেকে প্রচার করা হবে। বিরোধীদের অন্দোলনের সামনে পিছু হটার যে প্রশ্ন নেই, সেই বার্তা দিতে ধাপে ধাপে সুর চড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। সাধারণ মানুষকে এই আইনের উপযোগিতা বোঝানোর পাশাপাশি বিজেপি নেতারা তাঁদের বক্তব্যে ক্রমেই আক্রমণাত্মক হচ্ছেন। যাতে তৃণমূলস্তরে দলীয় কর্মীদের মনে না হয়, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের ঠেলায় শীর্ষ নেতাদের মনোবল ধাক্কা খেয়েছে। খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ শুক্রবার যোধপুরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন, সিএএ কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরবে না কেন্দ্র। আর দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশ যে ভাবে ফেব্রুয়ারি থেকেই সিএএ কার্যকরী করার কাজ শুরুর কথা বলেছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে তৃণমূল-সহ দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলি। বিজেপি অবশ্য মনে করছে, বিরোধীদের এই অন্দোলন সংগঠিত চেহারা নিতে পারবে না। অচিরেই আন্দোলন গতি হারাবে। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেই বিরোধীদের মাজা ভেঙে যাবে।’ তাঁর দাবি, ‘এমনিতেই গোটা দেশের মতো বাংলাতেও সিএএ-বিরোধী আন্দোলন এখন অনেক স্তিমিত।’ আরও পড়ুন:
from Bengali News, Latest Bengali News, Bengali Khabar, Bengali News Headlines, বেঙ্গলি খবর https://ift.tt/35ls9r3
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন