বরিশালের টাইমস, জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারা বাংলা, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, চাকরি, বিনোদন, সাতসতেরো, ক্যাম্পাস, অন্যান্য

Breaking

মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৯

মমতার নির্দেশেই সরকারি সাহায্য কোরপানের স্ত্রীকে

মহম্মদ মহসিন, উলুবেড়িয়াএনআরএস-জট কাটার আগেই খুশির খবর এল আরজিনা শাহর ঘরে। সাড়ে চার বছর যে ঘর তছনছ হয়ে গিয়েছিল এনআরএসেই।২০১৪ সালের মাঝ নভেম্বরে আরজিনার স্বামী কোরপান শাহকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। জুনিয়র ডাক্তার নিগ্রহে প্রতিবাদ-আন্দোলনের কথা শুনে আরজিনা বলেছিলেন, ‘আমার স্বামীকে যাঁরা মারলেন, তাঁদের শাস্তি হবে তো?’ গত শুক্রবার আরজিনার বর্তমান অবস্থার কথা প্রকাশিত হয় ‘এই সময়’-এ। তার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়া জেলা প্রশাসনের কাছে হতদরিদ্র পরিবারটি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের নির্দেশ দেন। দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় জেলা ও উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসনে। শনিবারই উলুবেড়িয়া ১ নম্বর ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের তরফে কোরপানের স্ত্রী আরজিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁকে বলা হয় উলুবেড়িয়া ১ নম্বর ব্লকে আসতে। তবে তখন আরজিনা পরিচারিকার কাজ করতে বাড়ি থেকে প্রায় পনেরো কিলোমিটার দূরে অঙ্কুরহাটি গিয়েছিলেন। শনিবার আরজিনার দেখা না পাওয়ায় আবার রবিবার আরজিনার কৈজুড়ির বাড়িতে যান ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ পাণ্ডে ও উলুবেড়িয়া ১ নম্বর ব্লকের যুগ্ম বিডিও সুগতা দে। কৈজুড়িতে ৬ জাতীয় সড়কের পাশের রাস্তায় বৃষ্টির জমা জল পেরিয়ে আরজিনার বাড়িতে ঢোকেন তাঁরা। কোরপান যখন জীবিত ছিলেন তখন স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানে একটি ঝুপড়িতে থাকতেন। স্বামী মারা যাওয়ার কিছু দিন পর জীর্ণ ঝুপড়ি ছেড়ে আরজিনা ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাছেই তাঁর মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। স্থানীয় মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ‘আবাস যোজনা’র ঘর পেয়েছিলেন তিনি। ইটের দেওয়ালের দশ বাই বারো ফুট সেই ঘরে গাদাগাদি করে বাস সাত জনের। দেখা হওয়ার পর সরকারি আধিকারিকরা আরজিনাকে জানান, রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁকে ‘ডেস্টিটিউট মাইনরিটি উইমেন রিহ্যাবিলিটেশন স্কিম’-এ বাড়ি করার জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। রবিবারই আরজিনার হাতে সরকারি আধিকারিকরা তুলে দেন ৬০ হাজার টাকা। বাকি ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে পরে। পরিবারের সবাইকে জামাকাপড়, কিছু নগদ টাকা ও ত্রাণ হিসাবে চালও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের খাদ্য সুরক্ষা যোজনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক তুষার সিংলা বলেন, ‘আরজিনা যে এলাকার বাসিন্দা, সেই মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে একশো দিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করতে। কোনও সমস্যায় পড়লেও যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে আমাদের সঙ্গে।’সরকারি কর্তাদের বাড়িতে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যান আরজিনা। কোথায় তাঁদের বসতে দেবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। সোমবার সকালে আরজিনা বলেন, ‘যে মুখ্যমন্ত্রী আমার জন্য এত কিছুর ব্যবস্থা করেছেন, তাঁকে আমার সেলাম করতে বড় সাধ হচ্ছে। তাঁকে সেলাম করব কী করে? তবে সেলাম জানালাম আপনাদের (সংবাদমাধ্যম)। এত দিনে আমার একটা ব্যবস্থা হল।’ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক পুলক রায় বলেন, ‘মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মানবিক কাজ করেছেন। আমি আরজিনার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যাব।’তবে কোরপানের হত্যাকারীদের ভোলেননি আরজিনা। এখনও তাঁর দাবি, ‘এখনও স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই চাই।’

from Eisamay http://bit.ly/2x1CfP6

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Pages