এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ৯০ শতাংশ আসন রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষিত হতে বাধা কার্যত থাকল না। ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিলমোহর পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা কর্মসমিতিতে সেটি পাঠানো হয়। ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সোমবার নীতিগত ভাবে সহমত হয়েছে কর্মসমিতি। তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কিছু বক্তব্য রয়েছে। তা শোনার জন্য এবং ডোমিসাইল নীতি কেন চাওয়া হচ্ছে তা বোঝানোর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সহ উপাচার্য প্রদীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সবুজ সঙ্কেত পেলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই তা কার্যকর করবে বিশ্ববিদ্যালয়। আগেও বিষয়টি কর্মসমিতিতে উঠেছিল। সে বার অবশ্য এই নীতির বিরোধিতা করেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তাঁর যুক্তি ছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় গুরুত্ব রয়েছে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ এমিন্যান্সেরও তালিকাভুক্ত। সারা দেশ থেকে পড়ুয়ারা সেখানে ভর্তি হন বলেও কেন্দ্রীয় সরকারি বহু তহবিল বিশ্ববিদ্যালয় পায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য আসন সংরক্ষিত হলে নানা ক্ষেত্রে অনুদান পেতে সমস্যা হতে পারে। সে বার অবশ্য কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত মতোই কোন কোন বিভাগ ডোমিসাইল চায়, কারা চায় না, সে ব্যাপারে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়।সূত্রের খবর, সোমবার উপাচার্য-সহ উপাচার্য ডোমিসাইল নিয়ে সরাসরি আপত্তি তোলেননি। তবে নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধির কথা মাথায় রেখে এই আলোচনা পরে করার পক্ষে সওয়াল করেন। বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষকদের চাপের মুখে যদিও শেষ পর্যন্ত কর্মসমিতিতে তা আলোচনা হয়। এবং সেখানেই সিদ্ধান্তে নীতিগত সমর্থনের কথা বলেন বেশির ভাগ সদস্য।ডোমিসাইলের পক্ষে সবার আগে জোরালো অবস্থান নেয় ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার সব চেয়ে বড় বিভাগ মেকানিক্যাল। তারপর একে একে সিংহভাগ বিভাগই রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য আসন সংরক্ষণের পক্ষে রায় দেন। গত ৬ মার্চ সমস্ত বিভাগের বোর্ড অফ স্টাডিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসে ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল। সেখানে অবশ্য পাওয়ার, ইলেকট্রনিক্স বিভাগ ডোমিসাইল না করার পক্ষে সরাসরি সওয়াল করে। আর কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু আপত্তি জানানো কোনও বিভাগই নোট অফ ডিসেন্ট না দেওয়ায় এবং বেশির ভাগ বিভাগ সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করায় ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের রায় ডোমিসাইল নীতির পক্ষেই যায়।গত কয়েক বছর ধরে লাফিয়ে বাড়ছে ভিন রাজ্যের পড়ুয়া সংখ্যা। বর্তমানে অনেক বিভাগে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি পড়ুয়া ভিন রাজ্যের। এঁরা জয়েন্টে ভালো ফলাফল করলেও পরবর্তীতে খুব একটা ভালো নম্বর পাচ্ছেন না বলে অনেক বিভাগের মূল্যায়ন। তা ছাড়া নীতি পুলিশি, ক্যাম্পাসে-হস্টেলে দাদাগিরি, শিক্ষকদের অসম্মান করার মতো একাধিক অভিযোগে জেরবার বহু বিভাগ। ফলে অনেক অধ্যাপকই এই পড়ুয়াদের নিয়ে তিতিবিরক্ত। যার প্রতিফলন আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল, এ দিন কর্মসমিতিও এই মতামতকে গুরুত্ব দিল।এ দিন কর্মসমিতির বৈঠক চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডিজেবিলিটিতে নানা দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ তুলে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে দেন। আবার ক্যাম্পাসে সিসিটিভির দাবিতে অবস্থান করে টিএমসিপি। কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথের বক্তব্য, ‘ওই সেন্টারে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে। তার মাঝে ওই সেন্টার কী করে নতুন প্রজেক্ট নেয়? এই প্রশ্নের যথার্থ উত্তর না পাওয়ায় আমরা অবস্থানে বসেছি।’
from Eisamay https://ift.tt/2TOtNR9
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Author Details
I am an Executive Engineer at University of Barishal. I am also a professional web developer and Technical Support Engineer.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন