বরিশালের টাইমস, জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারা বাংলা, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, চাকরি, বিনোদন, সাতসতেরো, ক্যাম্পাস, অন্যান্য

Breaking

শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯

দুয়ারে ভোট, নির্ঘুম সমীরেরা

কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী ঘোষণা তখনও শেষ হয়নি। টিভির পর্দায় এক এক করে নাম বলে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফোনটা এল সূর্য সেন স্ট্রিটের সমীর গুণীনের কাছে। ওদিক থেকে আসা পর পর নির্দেশগুলোর জবাবে শুধু হুঁ-হুঁ করে গেলেন সমীর। সব শেষে বললেন, '৬টা নয় দাদা, ৭টা কর প্লিজ। একটা কাজ চলছে। ওটা শেষ করেই তোমাদেরটা ধরছি।' ফোনটা রেখে কর্মীদের উদ্দেশে হাঁক পাড়লেন, 'সুদীপদা'যর চারটে ফ্লেক্স বানিয়ে দিতে হবে ৭টায়। কাজ শুরু করে দে।' ছবিটা বদলে গেল কয়েক মিনিটের মধ্যেই। ভোটের বাদ্যি বেজে ওঠার পর থেকে এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন রাজাবাজার, বৌবাজার অঞ্চলের ফ্লেক্স ব্যবসায়ীরা। পুজোর মুখে কোনও দর্জির দোকানের অবস্থা যেমন হয়ে ওঠে, ভোটে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর উত্তর কলকাতার এই ফ্লেক্স ব্যবসায়ীদের অবস্থাও ঠিক তেমনটা হয়ে ওঠে। সারা বছর নানা ধরনের ফ্লেক্স তৈরির যে অর্ডার তাঁদের কাছে আসতে থাকে, সেই সব সামলে রাত জেগে ভোটের অর্ডার জোগান দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যায় ভোটের মুখে। সূর্য সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা সমীর গুণীন বললেন, 'ভোটের আবহ তৈরি হতেই আমার মতো ব্যবসায়ীরা কিছু টেমপ্লেট তৈরি করে রাখেন। বাকি থাকে শুধু প্রার্থীর নাম ও ছবি বসানোর কাজ। আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু বাঁধা প্রার্থী থাকেন। আমি যেমন উত্তর কলকাতার কাজ করি।' উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ থেকে প্রার্থীর ছবি খুঁজতে শুরু করে দিয়েছিলেন সমীরের সহযোগীরা। ছবি পেতেই কয়েক মিনিটের মধ্যে টেমপ্লেট তৈরির কাজ শেষ। রাজাবাজারের ফ্লেক্স ব্যবসায়ী শাহনওয়াজ বলছেন, 'এখন কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আমি টেমপ্লেট বানিয়ে সেই ছবি হোয়াটস্যাপ করে দেব। পার্টির পছন্দ হলে ছেপে দেব।' কতক্ষণ সময় লাগে এমন একটা ফ্লেক্স ছাপতে? ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এখন কাজ হয় প্রধানত 'সলভেন্ট প্রিন্টিং মেশিন' দিয়ে। এই যন্ত্রে সারা দিনে ছ'হাজার ফ্লেক্স ছাপা যায়। সমান্তরাল ভাবে অন্য কাজও থাকে। তাই ভোটের অর্ডার মেটাতে সারা রাত কাজ করার মানসিকতা নিয়েই নিয়েছেন কর্মীরা। ফ্লেক্স ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ভোটের মুখে একমাস পরিশ্রম করে তাঁরা অন্তত পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা অতিরিক্ত রোজগার করেন। কাজেই এই সময়টা এলে ভোট ছাড়া অন্য কাজের অর্ডার নেওয়াও ক্রমশ কমাতে কমাতে একসময় বন্ধই করে দেন তাঁরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, 'ছবি তো তৈরিই থাকে। খালি ছাপানোর কাজ। হাতে হাতে পয়সা। কাজেই পরিশ্রম গায়ে লাগে না।'

from Eisamay https://ift.tt/2HvR5ns

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Pages