প্রিন্স তালুকদার: জীবনের ছকটা বড় অদ্ভুত! অনেক কিছু চাইলে যেমন হয়না, আবার না চাইলেও অনেক কিছু পেয়ে যাই। কখনো মন খারাপ, কখনোবা ভালো। মেনে নিতে হয়। জীবনের ছকের বাইরে যাবার এতটুকু সাধ্য কারো নেই। একটা জীবনে অনেক চাওয়া থাকে, আকাঙ্খা থাকে। কিছু পূরণ হয়, আবার অপূর্ণতাও থাকে। তবুও জীবন চলে! কিন্তু প্রিয় মানুষকে চিরতরে হারিয়ে ফেলার কষ্ট সহ্য করা সত্যিই কঠিন।
আমার প্রিয় আত্মার মানুষ, সুখ দুঃখের সাথী। ওনার মতো প্রানবন্ত একজন মানুষ এত কম বয়সে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পরপারে চলে যাবে ভাবতে কষ্ট লাগে। হঠাৎ করেই যেন একটি প্রদীপ নিভে গেল। যে প্রদীপের আলোয় আলোকিত ছিল পেশাগত সহকর্মী জগত।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় কর্মরত দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ফিরোজ ভাইয়ের এ্যাজমা জনিত শ্বাসকষ্টের অসুস্থতার খবরে তেমন বিচলিত ছিলাম না। এ্যাজমা আক্রান্ত একজন মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে তেমন শঙ্কিত না হওয়াটা ছিল আমার খুব স্বাভাবিক। আমরা স্বপ্ন ছিল, বিশ্বাস ছিল ফিরোজ ভাই সুস্থ হয়ে উঠবে। জানি চিকিৎসার ক্ষেত্রে এতটুকু কার্পণ্য ছিল না। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা বোধহয় ওনার নিশ্বাস নেওয়ার বরাদ্দটা আর বাড়াতে চাননি। সেজন্যই শত চেষ্টাতেও তাকে ধরে রাখা যায় নাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় সূর্য ধোবার মত ধীরে ধীরে রঙিন আভায় রাঙিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।
পেশাগত ঢের বেশি বছরের পরিচয় না হলেও মনে হতো যুগ যুগান্তরের আপন একজন মানুষ। আপনার কথাগুলো এখনও জড়িয়ে আছে, কানে বাজে।
সাংবাদিকতার পেশাগত কাজে ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ ও জনপ্রিয়, একধরনের সম্মোহনী শক্তি ছিল। মানুষকে সম্মান দিতে জানতো। কাউকে ছোট করা ছিল ওনার স্বভাববিরুদ্ধ। যে কারণে, মানুষের ভালোবাসা পাওয়া ওনার জন্য সহজ ছিল। কাউকে সহযোগিতা করার মনোভাবও ছিল ওনার মধ্যে লক্ষ্যনীয়। সবকিছু মিলিয়ে ওনার মধ্যে একটা অন্যরকম গুন ছিল।
আপনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আপনার গুনে আর সৃজনশীলতায়। আপনার মৃত্যুতে না থাকার কষ্টটা বোঝানোর মত নয়। শুধু এটুকুই বলবো, ওপারে ভালো থাকবেন। আপনার রুহের মাগফেরাত কামনা করি…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন