বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল: সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতের সৌন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে। তাই প্রতিবছর দেশ-বিদেশের লাখো পর্যটক কুয়াকাটা সৈকতে ঘুরতে আসেন। কিন্তু বর্তমানে সৈকতের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা আবর্জনা।
এছাড়া বিভিন্ন নিচু স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা পনিরা মধ্যেও আবর্জনা পচতে দেখা দেছে। ফলে দূষিত হচ্ছে সৈকতের পরিবেশ। পঁচা গন্ধে আগত পর্যটকদের চোখে মুখে দেখা গেছে বিরক্তির ছাপ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার না করার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাই খাবারের অবশিষ্টাংশসহ বিভিন্ন ধরনের চিপসের প্যাকেট ও প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার শেষে ফেলে রাখছেন সৈকতে।
এছাড়া সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে ও পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ফুসকা-চটপটি এবং ফিস ফ্রাইয়ের দোকান। এসব দোকানের বর্জ্যও ফেলে রাখা হয় সৈকতে। বিশেষ করে সৈকতের বেড়িবাঁধের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটলের পানি এসে পড়ছে সমুদ্রে। এসব পানি সৈকতের পশ্চিম পাশের নিচু স্থানে জমে রয়েছে। ফলে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
এদিকে সৈকতের গঙ্গামতি, ঝাউবাগান ও লেম্বুর চরে প্রায়ই ভেসে আসছে মৃত জেলিফিস। এসব জেলিফিস পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ালেও তা অপসারণে প্রশাসনের পেক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঢাকার নারায়নগঞ্জ থেকে আসা শামিম-শাকিলা দম্পত্তি জানান, সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের হৃদয় কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু পশ্চিম পাশে জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। যার ফলে বেঞ্চিতে বসে আমরা সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করতে পারছিনা।
যশোর থেকে আসা অপর পর্যটক গৌতম হাওলাদার বলেন, ‘আমরাই প্লাষ্টিকের বোতলসহ খাবার ফেলে রেখে সৈকত অপরিচ্ছন্ন করে রাখছি। আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। এছাড়া এখানের ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছেমতো সৈকতটি ব্যবহার করছে। বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখছে। সার্বক্ষনিক সৈকত এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সৈকতের চটপটি ব্যবসায়ী রহিম মিয়া বলেন, ‘আমরা সৈকত সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। পৌরসভার কয়েকজন সপ্তাহে দুইবার সৈকত পরিচ্ছন্ন করে। তাদের আমরা টাকা দেই। কিন্তু পরিচ্ছন্ন কর্মীর সঙ্কট রয়েছে।’
সৈকত লাগোয়া কসমেটিক্স ব্যবসায়ী সুলতান মিয়া বলেন, ‘পৌরসভার কর্মীরা সঠিকভাবে সৈকত পরিচ্ছন্ন করেনা। যার ফলে সৈকতের আজ এ দুরাবস্থা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ‘সৈকতের পরিচ্ছন্নতার কাজে ৪০ জন কর্মী রয়েছে। পৌরসভার কর্মী এবং ব্লুগার্ডের সদস্যরাও এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তারপরও সৈকতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সঙ্কট রয়েছে।
বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির মাধ্যমে অচিরেই আরো পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। সৈকতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজের গতিশীলতা বাড়ানো হবে। তবে এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের দায়িত্বশীল হতে হবে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন