বরিশালের টাইমস, জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারা বাংলা, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, চাকরি, বিনোদন, সাতসতেরো, ক্যাম্পাস, অন্যান্য

Breaking

বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২০

দু’চোখ উপড়ে ফেলা সেই শাহজালাল কারামুক্ত

দু’চোখ উপড়ে ফেলা সেই শাহজালাল কারামুক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছিনতাইয়ের অভিযোগে দু’ চোখ উপড়ে ফেলা খুলনার আলোচিত সেই শাহজালাল হাওলাদার দু’ মাস তিন দিন পর অবশেষে কারামুক্ত হয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন তিনি।

এর আগে সোমবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শহীদুল ইসলামের আদালতে শাহজালালের জামিন মঞ্জুর হয়।

আদালতে জামিন শুনানিতে অংশ নেন মানবাধিকার সংগঠক ও আইনজীবী মো. মোমিনুল ইসলাম ও ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর আইনজীবী অশোক কুমার সাহা।

আগামী ২২ এপ্রিল এ মামলার আপিলের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম।

খুলনা কারাগার থেকে শাহজালালের মুক্তির সময় তার বাবা মো. জাকির হোসেন ও মা রেনু বেগম উপস্থিত ছিলেন। কারামুক্তির পর এক প্রতিক্রিয়ায় শাহজালালের বাবা-মা বলেন, ‘তার অন্ধ ছেলের কাছে কারাগার এবং মুক্ত আকাশ সবই সমান।’

এ বিষয়ে গত ৮ ডিসেম্বর রাইজিংবিডিতে ‘কারাগারে যেভাবে কাটছে দু’ চোখ উপড়ানো শাহজালালের দিন’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

শাহজালাল হাওলাদার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের মো. জাকির হোসেন হাওলাদারের জৈষ্ঠ পুত্র। তিনি খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনিতে শ্বশুরবাড়ি বসবাস করতেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাতে খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালী এলাকায় ছিনতাইয়ের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ শাহজালালকে গ্রেপ্তার করে। ওই রাতেই শাহজালালকে চোখ উৎপাটন করা অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একইসঙ্গে রাতে সোমা আক্তার নামে এক নারী বাদী হয়ে শাহজালালসহ দুই জনের নামে ছিনতাই মামলা দায়ের করেন।

গত ৪ নভেম্বর খুলনা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আমিরুল ইসলাম এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দু’চোখ অন্ধ শাহজালালকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর শাহজালালকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অপরদিকে ওই সময় শাহজালাল দাবি করেন, দেড় লাখ টাকা না পেয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে খালিশপুর থানা পুলিশ তার দু’ চোখ তুলে ফেলে।

তবে পুলিশের দাবি, ছিনতাইকালে জনতার পিটুনিতে চোখ হারিয়েছেন শাহজালাল। এ ঘটনায় একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদি হয়ে খালিশপুর থানার তৎকালীন ওসি নাসিম খান এবং ১১ পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এজাহারে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই তার ছেলে শাহজালাল মহানগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুরবাড়ি থেকে রাত ৮টায় শিশুর দুধ কেনার জন্য বাসার পার্শ্ববর্তী দোকানে যান। এসময় খালিশপুর থানার তৎকালীন ওসি নাসিম খানের নির্দেশে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়।

পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে পুলিশের গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যায়। পরদিন ১৯ জুলাই খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাকে দুটি চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় শাহজালাল জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালী হয়ে বিশ্ব রোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার হাত-পা চেপে ধরে এবং মুখের মধ্যে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দ’চোখ উপড়ে ফেলে।

মামলার আসামিরা হলেন- খালিশপুর থানার সাবেক ওসি মো. নাসিম খান, এএসআই রাসেল, এসআই তাপষ কুমার পাল, এসআই মো. মোরসেলিম মোল্লা, এসআই মো. মিজানুর রহমান, কনস্টেবল আল মামুন, আনসার সিপাই মো. আফসার আলী, ল্যান্স নায়েক আবুল হাসেম, আনসার নায়েক রেজাউল হক, এসআই মো. নূর ইসলাম, এসআই সৈয়দ সাহেব আলী এবং সহযোগী সুমা আক্তার ও মো. রাসেল। এ সংক্রান্ত মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।



খুলনা/নূরুজ্জামান/বুলাকী



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/37OXdkn

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Pages