বরিশালের টাইমস, জাতীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, সারা বাংলা, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, চাকরি, বিনোদন, সাতসতেরো, ক্যাম্পাস, অন্যান্য

Breaking

বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২০

কুলা বিক্রি করে চলে তাঁদের সংসার

কুলা বিক্রি করে চলে তাঁদের সংসার

গাজী হানিফ মাহমুদ

নরসিংদীতে শতাধিক পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে কুলা তৈরি করা। আর এ কুলা তৈরি করেই চলে তাঁদের সংসার। পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় এদের বসবাস। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সংসারের সব খরচের টাকা আসে এই কুলা বিক্রি করে। প্রশিক্ষণ নয়, মা-চাচিদের দেখে দেখে তাঁরা এ পেশায় দক্ষতা অর্জন করেছেন।

এখানকার বেশির ভাগ নারীই সংসারের কাজের ফাঁকে যখনই সময় পাচ্ছেন, তখনই সময় ব্যয় করছেন কুলা তৈরির কাজে। বাড়ির বউ-মেয়ে থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সময় দিচ্ছেন এ কাজে। গৃহকর্তারা বাজার থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে, তা শলাকা করে দিচ্ছেন, আর সেই শলাকা দিয়ে নিপুণভাবে গৃহিণীরা তৈরি করে যাচ্ছেন কুলা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গৃহিণীরা কুলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় আলো রানী নামে এক গৃহিণী জানান, বংশানুক্রমে এই কাজ করেন তাঁরা। এই গ্রামের শতাধিক পরিবার এ পেশায় জড়িত। তাঁরা দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে কুলা তৈরির কাজে।

আলো রানী আরো জানান, একটি বড় আকারের বাঁশ থেকে ৪০টি কুলা তৈরি করা যায়। আর ৪০টি কুলা তৈরি করতে ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগে। এরপর একসঙ্গে সবগুলো জমিয়ে তা বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়। আবার কোনো কোনো মৌসুমে বাড়ি থেকেই বেপারিরা কুলা কিনে নিয়ে যায়। প্রতিটি কুলা বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। সপ্তাহ শেষে এক-একটি পরিবার প্রায় ৩ হাজার টাকার মতো কুলা বিক্রি করতে পারে। চৈত্র মাসের সময় কুলার বেপারিরা এলাকায় এসে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। তখন একটু বেশি দামও পাওয়া যায়।

এ ছাড়া বছরের বাকি সময়টাতে হাট-বাজারে গিয়ে কুলা বিক্রি করতে হয়। সরকারি প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা পেলে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন সামগ্রী তৈরি করতে পারবে বলে জানিয়েছেন এ পেশায় জড়িতরা।

একই এলাকার সূচিত্রা রানী নামে এক গৃহিণী জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় আস্তে আস্তে কুলার ব্যবহার কমে যাচ্ছে। বংশ পরম্পরায় এ পেশায় ছিলেন তাই পরিশ্রম অনুসারে উপার্জন কম হলেও তাঁরা এ পেশাকে ধরে রেখেছেন।

জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম গাজী বলেন, ‘গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুলা তৈরির কাজ এ অঞ্চলের শতাধিক পরিবার ধরে রেখেছে।’

সরকার থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রস্তাব করবে বলে জানান তিনি।


নরসিংদী/হাকিম মাহি



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/37PD121

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Pages