হিমাদ্রি সরকার ও মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত২-এ ২, ৩-এ ৩, ৫-এ ৩, ৮-এ ৩, ৭-এ ৩, ৮-এ ৪, ৯-এ ০।রাজ্যে সাত দফার লোকসভা ভোটের সপ্তম দফায় সবচেয়ে বেশি আসনে ভোট হয়েছে। কিন্তু সেই দফাতেই থমকে গিয়েছে গেরুয়া ঝড়। বিজেপির জন্ম ইস্তক বাংলায় এ বছর সবচেয়ে বেশি ভোট গিয়েছে পদ্ম শিবিরের ঝুলিতে। ৪০.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে রাজ্যের শাসকদলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। অথচ ভোট-সপ্তমীতেই সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স তাদের। ন’টি কেন্দ্রের একটিতেও বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৪০ শতাংশে পৌঁছয়নি। আগের ছ’দফায় যেখানে গেরুয়া শিবির সমান তালে তৃণমূলের সঙ্গে লড়ে গিয়েছে, সে জায়গায় শেষ দফায় তাদের ফল খারাপ কেন, তা ভাবাচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকে।শেষ দফায় যে আসনগুলিতে ভোট হয়েছে, সেগুলি যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে ছিল না, এমন নয়। ন’টি কেন্দ্রের মধ্যে চারটি জায়গায় সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও দমদম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও মথুরাপুরে মোদীর সভায় ভিড় উপচে পড়ে। শেষ দফার ভোটের আগে কলকাতায় রোড-শো করে গিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এই ন’টি কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত তিনটি আসন তাদের ঝুলিতে আসবে বলে আশা করছিল। কিন্তু ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ওই চার কেন্দ্রে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ৩০.১২, ৩৮.১১, ৩৩.৩৯ এবং ৩৭.২৭ শতাংশ।তাহলে কি মোদী ম্যাজিক কাজ করেনি এই কেন্দ্রগুলিতে? রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘শেষ দফায় যে এলাকাগুলিতে ভোট হয়েছে, সেগুলিকে তৃণমূলের ভরকেন্দ্র বলা চলে। তৃণমূলের উত্থানের সময় এই জায়গাগুলি থেকেই দল প্রভাব বিস্তার করেছিল। দেখা যাচ্ছে, বিজেপির ঝড় এখানে এসে আটকে গেল। অর্থাৎ তৃণমূলের ট্র্যাডিশনাল ভোটাররা যে জায়গায় ছিলেন, সেটা এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। তার সঙ্গে এ বার প্রথম থেকেই সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছিল। শেষ দফায় সেই মেরুকরণ আরও তীব্র হয়েছে।’উদয়নের সঙ্গে কিছুটা সহমত রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শনিবার বলেন, ‘শেষ দফায় যে কেন্দ্রগুলিতে ভোট হয়েছে, সেখানেও আমাদের প্রাপ্ত ভোটের হার আগের থেকে অনেক বেড়েছে। ভোট যত এগিয়েছে, সংখ্যালঘু ভোট তত এককাট্টা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সিপিএমের ভোট পুরো আমাদের দিকে গিয়েছে। তা নয়। সেটা তৃণমূলের বাক্সেও গিয়েছে। বসিরহাটে বামেদের দিকে ঝুঁকে থাকা সংখ্যালঘু ভোট যেমন সবটাই গিয়েছে তৃণমূলে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্বিতীয়-তৃতীয় দফায় ভোট হওয়া রায়গঞ্জ, মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে বিপুল পরিমাণ সংখ্যালঘু ভোট থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস, তৃণমূল ও বাম শিবিরে সেই ভোট ভাগাভাগি হয়েছে। যার ফলে রায়গঞ্জ ও মালদহ উত্তর কেন্দ্র দু’টি বিজেপি দখল করেছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে মালদহ দক্ষিণে। মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে সংখ্যালঘু মুলসিম ভোট গিয়েছে তৃণমূলে। বহরমপুরে সেটা গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। এরপর থেকে যত ভোট এগিয়েছে, ততই সংখ্যালঘু ভোট এককাট্টা হয়েছে। শেষ দফায় সেটা আরও তীব্র হয়েছে। তবে রাজ্য বিজেপির আর এক সাধারণ সম্পাদক তথা বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুর মতে, ‘বসিরহাটে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাও হারের জন্য দায়ী।’
from Eisamay http://bit.ly/2HE2PEa
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Author Details
I am an Executive Engineer at University of Barishal. I am also a professional web developer and Technical Support Engineer.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন